
নগর ভবনে মেয়র ইস্যুতে রাজনীতির খেলা
- আপলোড সময় : ২২-০৬-২০২৫ ০৫:২৪:০৫ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ২২-০৬-২০২৫ ০৫:২৭:৩৫ অপরাহ্ন


* ডিএসসিসির সেবা প্রার্থী বাসিন্দাদের চরম ভোগান্তি * ইশরাকের কর্মকাণ্ডকে ক্রিমিনাল অফেন্স আখ্যা দিয়ে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যূত্থানে পালিয়ে যায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। তবে সম্প্রতি বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার দাবিতে টানা আন্দোলন ও কর্মসূচি পালন করে আসছে তার কর্মী-সমর্থকরা। একইসঙ্গে ডিএসসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও বড় একটি অংশ এই আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত আছেন। তারা মূল ফটক আটকানোর পাশাপাশি ডিএসসিসি সব বিভাগের অফিস গেটে তালা ঝুলিয়ে রেখেছে। যার ফলে বন্ধ রয়েছে সেবা কার্যক্রম, ভোগান্তিতে পড়েছে সেবা প্রার্থীরা। প্রায় দুই মাস যাবত আন্দোলন করে আসলেও শপথ নিতে পারেননি অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র বীরমুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকার সন্তান ইশরাক হোসেন। সবকিছু দেখে মনে হচ্ছে,নগর ভবনের মেয়র ইস্যুতে ‘রাজনীতি খেলা’ চলছে। পাশাপাশি চলছে হুমকী-পাল্টা হুমকীও। সংশ্লিষ্ট্রদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানা গেছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবন সচল করার উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এ লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার ছাড়াও উপদেষ্টা পরিষদের একাধিক সদস্য কাজ করছেন। বিএনপির হাই কামান্ডের সঙ্গে এরইমধ্যে আলোচনাও করেছেন তারা। রাজনৈতিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেই এই কাজ করতে চাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। সর্বশেষ ১৯ জুন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে ইশরাক ইস্যু বিএনপিকে একটি বার্তা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। মেয়র পদে শপথ পড়ানোর দাবিতে নগর ভবন অবরুদ্ধ করে রাখা ইশরাক হোসেন স্বেচ্ছায় সরে না গেলে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে নির্বাচনের দিকে এগোবে সরকার-সভায় বিএনপিকে এই বার্তা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সিটি করপোরেশন নির্বাচনের এমন বার্তার কথা আলোচনায় আসার পর বিএনপি নেতাদের মধ্যেও প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। সিনিয়র নেতারা বলছেন, ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনকে জাতীয় নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণার কথা বলা হয়েছে। এ অবস্থায় জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনোভাবেই স্থানীয় নির্বাচনের সুযোগ নেই। জানা গেছে, বিএনপির সঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে ইশরাক ইস্যুতে আলোচনার এমন ঘটনার মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার রাজস্ব কর্মকর্তাদের সঙ্গে পূর্ব ঘোষিত সভা করেননি ইশরাক হোসেন। এর আগের তিন দিন স্বাস্থ্য বিভাগ, ওয়ার্ড সচিব এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সঙ্গে সভা করেছিলেন ইশরাক হোসেন। এসব সভায় নগর ভবনের অডিটরিয়াম ব্যবহার করা হয়। একইসঙ্গে ইশরাক হোসেনের নামের আগে ‘মাননীয় মেয়র’ এবং ‘নির্বাচিত মেয়র’ ব্যবহার করা হয়। শপথ পড়ানোর দাবিতে চলামান আন্দোলন ৩৭ দিন অতিবাহিত হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। এরমধ্যে ডেঙ্গু ও করোনার বিস্তার শুরু হয়েছে। নগর ভবনে চলমান আন্দোলনের কারণে ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন, ওয়ারিশ ও চারিত্রিক সনদ, জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন, হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধসহ বিভিন্ন ধরনের নাগরিক সেবা বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও স্থবির হয়ে পড়েছে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ। অল্প বৃষ্টিতে দেখা দিচ্ছে জলাবদ্ধতা। এর মাঝে বেড়েছে মশার উপদ্রব। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ঢাকা দক্ষিণের নাগরিক সমাজ। আরমান হোসেন নামের দক্ষিণ সিটির বংশালের বাসিন্দা বলেন, ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করার জন্য এক মাস ধরে সিটি করপোরেশনের বারান্দায় ঘুরছি। কিন্তু কোনোভাবেই তা করতে পারছি না। নগর ভবনের সব দরজায় তালা। কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী নেই। একই সুরে কথা বলেছেন পুরান ঢাকার আরমানিটোলার বাসিন্দা শাহিদা আক্তার। তিনি বলেন, মেয়ের পাসপোর্ট করাতে গিয়ে দেখি জন্মনিবন্ধন সনদে একটি ভুল আছে। সেটা ঠিক করতে নির্ধারিত ফরমে সংশোধন করেছি। কিন্তু ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক অফিসে জমা দিতে পারছি না। নগর ভবনে গিয়েছি, সেখানে তালা, কেউ নেই। তাই জমা দিতে পারিনি। তিনি বলেন, নগর ভবন তালাবদ্ধ করে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে এই আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা নেই। দুঃখজনক বিষয় হলো সরকারের সম্মতিতেই এই আন্দোলন চলছে। যদি তা না হতো তাহলে এতদিন তো এই আন্দোলন চলার কথা না। কেউ জনদুর্ভোগের কথা ভাবছে না। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভুঁইয়া বলেছেন, ডিএসসিসির নগর ভবন তালাবদ্ধ করে মেয়র পদে শপথ গ্রহণের চলমান আন্দোলনের কারণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইস্যুতে স্থানীয় সরকার বিভাগ কোনও আইন ভঙ্গ করেনি। বিষয়টি বিচারাধীন থাকা অবস্থায় গেজেটের মেয়াদ এবং পরবর্তী সময়ে সিটি করপোরেশনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় শপথ দেয়ার কোনও আইনি সুযোগ নেই। জোর করে নগর ভবন দখল নিয়ে শিগগিরই সরকার ব্যবস্থা নেবে। তার বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছে বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। তিনি বলেন, আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, বয়স এবং অভিজ্ঞতা কম হওয়ায় তিনি জানেন না সিটি করপোরেশনের কোন দফতরে কী ধরনের সেবামূলক কাজ হয়ে থাকে। আমরা সব ধরনের জরুরি সেবা চালু রেখেছি। বরং সরকার বিভিন্ন উপায়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সেবায় বাধা সৃষ্টি করছে। আমরা নগরবাসীকে সেবা দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, অথচ সরকার থেকেই সেই সেবায় বিঘ্ন ঘটানো হচ্ছে। তিনি দাবি করেছেন, তাকে মেয়র পদে শপথ না পড়ানোর জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ দায়ী। এমনকি আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে মেয়র ইস্যুতে ‘অসত্য এবং বিভ্রান্তিমূলক তথ্য’ গণমাধ্যমে উপস্থাপনের অভিযোগও করেন তিনি। এ কারণে তিনি উপদেষ্টা আসিফের পদত্যাগের দাবিও জানান। একইসঙ্গে আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে ‘আর্থিক ও রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার’ প্রকাশ্যে অভিযোগ করেছেন ইশরাক হোসেন। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা তার পছন্দের এক ব্যক্তিকে প্রশাসক নিয়োগ করে আর্থিক ও রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে সজীব ভূইয়া দেশের জনগণের ম্যান্ডেটকে অবজ্ঞা করেছেন। গণতন্ত্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অসত্য তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করেছেন যা প্রতারণার শামিল। আদালতের রায়ের পরেও শপথ না পড়ানোর বিষয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল বিগত ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচনের ফলাফল ও পরবর্তী সময়ে ৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত গেজেট বাতিল করে আমাকে মেয়র হিসেবে ঘোষণা করে এবং ১০ দিনের মধ্যে আমাকে মেয়র হিসেবে গেজেট প্রকাশের জন্য বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে নির্দেশ দেন। এই নির্দেশনা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন ১০ দিনের মধ্যে ২৭ এপ্রিল সংশোধিত গেজেট প্রকাশ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠিয়ে দেয়। সংশোধিত গেজেট পেয়ে শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন ছাড়া স্থানীয় সরকার বিভাগের কিছুই করণীয় নেই। কিন্তু আসিফ নানান প্রশ্ন তুলে কালবিলম্ব করে শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন থেকে বিরত আছে। তিনি আরও বলেন, গত ১৬ জুন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেছেন, শপথ গ্রহণের বিষয়টি বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় গেজেটের মেয়াদ শেষ হওয়ায় শপথ পড়ানো যায়নি। তার এ কথা সত্য হলে ভবিষ্যতে কোনও নির্বাচিত প্রতিনিধি আর শপথ পড়ার সুযোগ পাবেন না। অর্থাৎ বিজয়ী প্রার্থীর নামে গেজেট প্রকাশিত হলে পরাজিত প্রার্থী শপথ না পড়ানোর জন্য হাইকোর্ট ডিভিশনে রিট মামলা দায়ের করবে। আর ওই রিট মামলা অনিষ্পন্ন থাকলে গেজেটে উল্লিখিত ৩০ দিনের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে ভবিষ্যতে কোনও জনপ্রতিনিধি শপথ পড়ার সুযোগ পাবে না। এ সময় আদালতের রায়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। তিনি বলেন, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বয়সে খুবই তরুণ। সামনে তাকে অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। কাজেই জনগণের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ, আদালতের রায়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শন তার কাছ থেকে কাম্য। অসত্য তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করা তার কাজ নয়। কারণ এত অত্যাচার, নির্যাতন সহ্য করে যেসব জনগণ তাদের নির্দিষ্ট লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়নি, তাদের তিনি বিভ্রান্ত করতে পারবেন না। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষ থেকে উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে নির্মাণ করা গণগ্রন্থাগারের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যেগ দেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। এ সময় তিনি বলেন, গণমাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে সরকারের ‘স্পষ্ট অবস্থান’ তুলে ধরেছি। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিষয়ে বলেন, আর চুপ থাকার মতো পরিস্থিতি নেই। তিনি বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তবে আমরা যতটা সম্ভব, বাইরে থেকে হলেও নাগরিক সেবা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করছি। সরকার বিষয়টি জানে। তাই মন্ত্রণালয়ের এককভাবে সিদ্ধান্ত নেয়ার কিছু নেই। এর আগে ইশরাক হোসেনের কর্মকাণ্ডকে ‘ক্রিমিনাল অফেন্স’ আখ্যা দিয়ে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, বিএনপির সমর্থক ইশরাক হোসেন নগর ভবন দখল করে সিটি করপোরেশনের অফিস কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করেছেন। এটি একটি ক্রিমিনাল অফেন্স, পেনাল কোডে এর প্রাধান্য রয়েছে। তিনি সরকারি কাজে বাধা দিচ্ছেন, আইন অনুসারে তার বিরুদ্ধে মামলা করা প্রয়োজন। গত ১৯ জুন প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে ৯ জন উপদেষ্টা অংশ নিয়েছেন। সভায় নগর ভবন অচল করায় উপদেষ্টারা ইশরাকের কর্মকাণ্ড নিয়ে ক্ষোভ ও বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। সেখানে একাধিক উপদেষ্টা সরকার প্রধানকে কঠোর হওয়ার পরামর্শ দেন। আজ রোববার এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হতে পারে বলেও জানা যায়। কারণ, নাগরিকদের ভোগান্তি বেড়ে যাওয়ায় প্রধান উপদেষ্টা বিষয়টি দ্রুত সমাধান করতে বলেছেন। মেয়র ইস্যুকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট জনদুর্ভোগ এবং সমাধান না হওয়ায় সরকার, ইশরাক ও বিএনপি সব পক্ষই প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বলে মত বিশ্লেষকদের। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান বলেছেন, ইশরাকের শপথ প্রক্রিয়া আটকে রাখার সিদ্ধান্ত ‘শুধু উপদেষ্টা আসিফের নয়, উপদেষ্টা পরিষদ ও প্রধান উপদেষ্টার সম্মতিতে’ নেয়া হয়েছে। তারমতে, প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির বৈঠকের পরেও এই সংকট অব্যাহত থাকায় ‘ডি-এস্কালেশন’ না হয়ে ‘আক্রমণাত্মক’ মুখাপেক্ষী সৃষ্টি হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার পরেও বিএনপি মাঠে তাদের অবস্থান ধারাবাহিক রেখেছে। বিএনপি ও সরকার উভয়ের আলোচনার মাধ্যমে এই ইস্যুতে স্থিতিশীলতা আনা জরুরি বলেও মন্তব্য করেন তিনি। স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, মেয়রের ইস্যুতে সরকার, বিএনপি ও ইশরাক সবাই বাড়াবাড়ি করেছে। আইন অনুযায়ী ইশরাকের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ নেই। তবে সব পক্ষ একমত হলে ইশরাক হোসেনকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দিতে পারে। তিনি বলেন, ইশরাক অত্যন্ত লজ্জাজনকভাবে মেয়রের দায়িত্ব পালন শুরু করছেন। এটি সমীচীন নয়। এর ফলে খারাপ নজির স্থাপন করা হচ্ছে। বড় দল হিসেবে বিএনপিরও এটা দেখার দায়িত্ব আছে। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস জয়ী হন। তখন কারচুপির অভিযোগ তুলে ফল বাতিলের দাবি জানিয়ে মামলা করেন বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেন। গত ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ইশরাক হোসেনকে নির্বাচিত ঘোষণা করে। গত ২২ এপ্রিল আইন মন্ত্রণালয়ে পরামর্শ চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরামর্শ পাওয়ার আগেই ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে ইসি। আইন অনুযায়ী গেজেটের ৩০ দিনের মধ্যে শপথ পাঠ করানোর দায়িত্ব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের। মন্ত্রণালয় তখন জানায়, হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী, মামলা দায়েরের পর আর্জি সংশোধনের সুযোগ নেই। কিন্তু ইশরাক গত বছরের সেপ্টেম্বরে তা করেছেন এবং ফল বাতিল নয়, তাকে জয়ী ঘোষণা করার আবেদন করেছেন। ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে দেয়া রায়ের সমালোচনা করে এনসিপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল দাবি করে, শেখ হাসিনার শাসনামলের অবৈধ নির্বাচনকে বৈধতা দেয়া হয়েছে এর মাধ্যমে। শপথ নিতে না পেরে ইশরাক হোসেনের সমর্থকরা ‘ঢাকাবাসী’র ব্যানারে গত ১৪ মে নগর ভবনের সামনে অবস্থান নেন এবং বিভিন্ন কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ